সৌদি প্রবাসীদের জন্য বাধ্যতামূলক হচ্ছে এই জিনিসটি!

এখন থেকে সৌদি যেতে প্রবাসীদের বাধ্যতামূলক হেলথ ইন্সুরেন্স করতে হবে। করোনা হলেই ইস্যুরেন্স প্রতিষ্ঠান তার চিকিৎসা ব্যয় বহন করার বিষয়ে এতে স্পষ্ট উল্লেখ থাকতে হবে। ভ্রমণসংক্রান্ত ক্ষেত্রে মিথ্যা তথ্য দিলে শাস্তি হিসেবে দেশে পাঠিয়ে দেওয়ার কোথাও বলেছে সৌদি সরকার। কেউ যদি করোনা ভাইরাস ছড়ায় তাকে ৫ বছরের জেল এবং সর্বোচ্চ ৫ লাখ সৌদি রিয়াল জরিমানা করবে দেশটির সরকার।

যদি সেই ব্যক্তি প্রবাসী হয়, তবে তাকে শাস্তি দেওয়া পর সৌদি থেকে বিতাড়িত করা হবে এবং সে আর কোনোদিন সৌদি আরবে আসতে পারবেনা। এছাড়াও ফ্লাইট পরিচালনার ক্ষেত্রে আরো বেশ কয়েকটি শর্ত জুড়ে দিয়েছে সৌদি সরকার।

এই অবস্থায় চরম বিপাকে পড়েছে বাংলাদেশ বিমানসহ সৌদি এয়ারলাইন্স। বাধ্য হয়ে বৃহস্পতিবার থেকে ২৪ মে পর্যন্ত সৌদি আরবগামী সব ফ্লাইট পরিচালনা স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স।

গত বুধবার রাত ১২টার পর এক বিজ্ঞপ্তিতে গণমাধ্যমকে এই সিদ্ধান্ত জানায় বিমান। এই অবস্থায় সৌদিগামী শত শত যাত্রী বিমানবন্দরে এসে চরম বিপাকে পড়েছেন। অনেকে ঢাকার বাইর থেকে এসে এখন ফ্লাইট না পেয়ে বিমানবন্দরে আটকা পড়েছেন।

বিমানবন্দর সূত্রে জানাগেছে ফ্লাইট না থাকায় বৃহস্পতিবার দিনভর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কয়েক হাজার যাত্রী চরম উৎকণ্ঠায় দিন কাটাতে দেখা গেছে। যাত্রীরা বলেছেন, তাদের অনেকের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। এখন যেতে না পারলে তারা আর সৌদি আরব ঢুকতে পারবেন না।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের উপ-মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) তাহেরা খন্দকার সাংবাদিকদের জানান, রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী এয়ারলাইন্সটির সৌদি কর্তৃপক্ষের হোটেল কোয়ারেনটাইনসহ বিভিন্ন শর্তারোপের কারণে পাঁচ দিনের সৌদি আরবগামী সব ফ্লাইট পরিচালনা স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

২০-২৪ ভ্রমণের জন্য বুকিংকৃত যাত্রীদের তাদের হোটেল বুকিং ও পরবর্তী যাত্রার সময় নির্ধারণের জন্য নিকটবর্তী যেকোনো বিমান অফিসে যোগাযোগের জন্য বিশেষ ভাবে অনুরোধ করা যাচ্ছে।

ঢাকা থেকে সৌদির জেদ্দা, রিয়াদ ও দাম্মার রুটে নিয়মিত ফ্লাইট পরিচালনা করে বিমান। এই সময়ে ভ্রমণের জন্য বুকিং করা যাত্রীদের তাদের হোটেল বুকিং ও পরবর্তী যাত্রার সময় নির্ধারণের জন্য নিকটবর্তী যে কোন বিমানঅফিসে যোগাযোগের জন্য বিশেষ ভাবেঅনুরোধ করেছেন তাহেরা খন্দকার।

সৌদি সরকারের বিধিনিষেধ: সম্প্রতি এক আদেশে ২০ মে থেকে বাংলাদেশ থেকে সৌদিগামী প্রবাসী শ্রমিকদের প্রবেশে নতুন বিধিনিষেধ আরোপ করে দেশটির সরকার। যারা করোনাভাইরাসের টিকা নেননি, সৌদি প্রবেশ করলে তাদের সাতদিন হোটেলে বাধ্যতামূলক প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। সেক্ষেত্রে হোটেলের খরচ নিজেকেই বহন করতে হবে।

সৌদি জানায়, সৌদি আরবে যাওয়ার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে পিসিআর পদ্ধতিতে করোনা নেগেটিভ রিপোর্ট আসলেই কেবল ঢাকা থেকে যাত্রীরা ফ্লাইটে উঠতে পারবেন। সৌদিতে পৌঁছানোর পর আরও দুইবার করোনা টেস্ট করতে হবে। প্রথমবার টেস্ট করতে হবে পৌঁছানোর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে। ৬ষ্ঠ দিনে আবারও করোনা টেস্ট করা হবে।

টেস্টের খরচ যাত্রীকেই বহন করতে হবে। টেস্টে নেগেটিভ রিপোর্ট আসলে হোটেল কোয়ারেন্টাইনে থেকে ৭ম দিনে নিজের বাসায় যাওয়া যাবে। তাছাড়া যারা পূর্ণ ডোজ টিকা নিয়েছেন তাদের টিকা নেওয়ার প্রমাণ পত্র সঙ্গে রাখতে হবে।

সেক্ষেত্রে ফাইজার-বায়োএনটেকের দুই ডোজ, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার দুই ডোজ, মডার্নার দুই ডোজ এবং জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকার এক ডোজ যারা নিয়েছেন তারা হোটেলে বাধ্যতামূলক প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে থাকার বদলে বাসায় কোয়ারেন্টাইনে থাকার সুবিধা পাবেন।

প্রথমবারের মতো প্রবাসীকে সৌদি যাওয়ার আগে হেলথ ইনস্যুরেন্স করাতে হবে। করোনা হলে ইনস্যুরেন্স প্রতিষ্ঠান তার চিকিৎসা ব্যয় বহন করার বিষয়ে এতে স্পষ্ট উল্লেখ থাকতে হবে। ভ্রমণসংক্রান্ত ক্ষেত্রে মিথ্যা তথ্য দিলে শাস্তি হিসেবে দেশে পাঠিয়ে দেওয়ার কোথাও বলেছে সৌদি সরকার।

কেউ যদি করোনাভাইরাস ছড়ায় তাকে ৫ বছরের জেল এবং সর্বোচ্চ ৫ লাখ সৌদি রিয়াল জরিমানা করবে দেশটির সরকার। যদি সেই ব্যক্তি প্রবাসী হয়, তবে তাকে শাস্তি দেওয়া পর সৌদি থেকে বিতাড়িত করা হবে এবং সে আর কোনোদিন সৌদি আরবে আসতে পারবেনা।